Admin প্রকাশিত: বৃহস্পতিবার , ৫ জানুয়ারী , ২০২৩
এক মসজিদে টানা ৩৫ বছর দায়িত্ব পালনের পর বর্ণাঢ্য আয়োজনে বিদায় জানানো হয়েছে হাফেজ মাওলানা গোলাম কিবরিয়া নামের এক ইমামকে। এ সময় এলাকাবাসীর অকৃত্রিম ভালোবাসার কারণে তাকে পেনশন হিসেবে ১৫ লাখ টাকা দিয়ে বিরল সম্মননা জানানো হয়।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, হাফেজ মাওলানা গোলাম কিবরিয়ার গ্রামের বাড়ি নোয়াখালীর সুবর্ণচর উপজেলার চরভাটা এলাকায়। তিনি মৃত হাফেজ সোলায়মানের ছেলে। পরিবার নিয়ে তিনি নগরের খুলশী থানার গ্রিন ভিউ আবাসিকের একটি ভাড়া বাসায় থাকেন। তার তিন ছেলে ও তিন মেয়ে রয়েছে। ছেলেদের সবাই কোরআনের হাফেজ। এলাকাবাসী, পুলিশ এবং মসজিদ কমিটির সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ১৯৯০ সালের দিকে হাফেজ মাওলানা গোলাম কিবরিয়া মসজিদটিতে ইমামতির দায়িত্ব নেন। এরপর কেটে যায় প্রায় ৩৪ বছর। এ সময়ে তার উদ্যোগে মসজিদটিতে নানা সংস্কার হয়। এলাকাবাসীর সহযোগিতায় মসজিদের পাশেই আল জামেয়াতুল ইসলামিয়া মদিনাতুল উলুম হেফজখানা নামে একটি মাদরাসা প্রতিষ্ঠিত করেন। বর্তমানে সেখানে অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত পাঠদান করা হয় ADVERTISEMENT এদিকে, গেলো বছর মহিলাদের ঈদের নামাজে অংশ নেওয়া সংক্রান্ত হাফেজ মাওলানা গোলাম কিবরিয়ার দেওয়া একটি মাসআলার কারণে মসজিদ কমিটি তাকে তাৎক্ষণিকভাবে বরখাস্তের সিদ্ধান্ত নেয়। তবে এই সিদ্ধান্ত মানতে পারেননি এলাকার অনেকেই। এ নিয়ে দুই পক্ষের উত্তেজনা তৈরি হলে বিষয়টি থানা পর্যন্ত গড়ায়। এরপর থানায় একাধিকবার বৈঠকের পর সিদ্ধান্ত হয় ইমামকে কমপক্ষে আট মাস সময় দিতে হবে। একই সঙ্গে মানবিক কারণে তাকে মসজিদ পরিচালনা কমিটির পক্ষ থেকে পেনশনের মতো ১৫ লাখ টাকা দিতে হবে। বৈঠকের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী নির্ধারিত সময় দায়িত্ব পালন শেষে গত ৩১ ডিসেম্বর বিদায় নেন ইমাম হাফেজ মাওলানা গোলাম কিবরিয়া। ১ জানুয়ারি তাকে বর্ণাঢ্য আয়োজনে বিদায় জানানো হয় এবং প্রদান করা হয় ১৫ লাখ টাকা সম্মান। এ বিষয়ে হাফেজ মাওলানা গোলাম কিবরিয়া ঢাকা পোস্টকে বলেন, আমি ১৯৯০ সালে মসজিদে ইমামতি শুরু করেছি। এরপর টানা সেখানেই ইমামতি করেছি। গত ঈদে আমি মহিলাদের ঈদের নামাজে অংশ নেওয়া সংক্রান্ত একটি মাসআলা সম্পর্কে জানাই। ‘আমি বলেছি ইসলামের প্রথম যুগে একে উৎসাহিত করা হয়েছিল। পরবর্তীতে হযরত উমর (রা.) এবং আয়েশা (রা.) এটি নিষেধ করেছেন। এসবের দলিল হিসেব আমি সহীহ বুখারীর হাদিস উপস্থাপন করেছি। কিন্তু এক সপ্তাহ পর আমাকে হঠাৎ মসজিদ থেকে বরখাস্ত করা হয়। এলাকার অনেকে কমিটির এই সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করেন। একপর্যায়ে বিষয়টি থানায় গড়ায়। ওসি সাহেবের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী আমি ৩১ ডিসেম্বর বিদায় নিই। আমাকে কমিটি থেকে ১৫ লাখ টাকা এবং ক্রেস্ট দেওয়া হয়।