Admin প্রকাশিত: রবিবার , ১ জানুয়ারী , ২০২৩
জমিজমা বিক্রিতে মধ্যস্থতা করতেন আবদুল মোতালেব হোসেন। একটি আবাসন নির্মাণ কোম্পানির ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) দিদারুল আলমের কয়েকটি জমি কেনায় মধ্যস্থতা করেন তিনি। এই সূত্রে দিদারুলের কাছে একটি চাকরি চান মোতালেব। চাকরির আশ্বাস দিয়ে তাঁর কাছ থেকে জাতীয় পরিচয়পত্র ও পাসপোর্ট সাইজের দুই কপি ছবি নেন দিদারুল। পরে তিনি বড় ভাই শহীদুল আলমকে দিয়ে আরেক ব্যক্তির পরিচয়পত্রের ওপর মোতালেবের ছবি বসিয়ে, স্বাক্ষর নিয়ে একাধিক ব্যাংকে এলসি (বিলপত্র) খোলেন। কিছুদিন পর মোতালেব জানতে পারেন, তিনি অর্থ পাচার আইনের ১৭টি মামলার আসামি।
শুল্ক গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা বলেন, মোতালেবের নামে রাজধানীর কয়েকটি ব্যাংকে এলসি খোলে প্রতারক চক্রটি। তারা পোলট্রি ফিডের মূলধনী যন্ত্রপাতির মিথ্যা ঘোষণায় শুল্ক ফাঁকি দিয়ে অস্তিত্বহীন বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের নামে বাণিজ্যিক পণ্য আমদানি করে। চীন থেকে থেকে আনা এসব পণ্যের মধ্যে ছিল গুঁড়া দুধ, মদ, সিগারেট ও এলইডি টেলিভিশন। এসব ঘটনায় মোতালেবের নামে অর্থ পাচার আইনে মামলাগুলো হয়।
শুধু মোতালেবই নন, তাঁর মতো আরও তিন ব্যক্তিকে একই ফাঁদে ফেলেন দিদারুল-শহীদুলরা। অপর ভুক্তভোগীরা হলেন আবদুল বারিক মিয়া, মো. কবির হোসেন ও বিল্লাল হোসেন খান। তাঁরা প্রায় দেড় হাজার কোটি টাকার মামলায় ফেঁসেছেন।
অন্যদিকে, দিদারুলরা গড়ে তুলেছেন বিপুল সম্পদ। তাঁদের প্রতারণা ও অর্থ পাচারের বিষয়টি শুল্ক গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদপ্তরের অনুসন্ধান উঠে এসেছে। দুই ভাইয়ের বিরুদ্ধে ঢাকা ও চট্টগ্রামে অর্থ পাচারসহ বিভিন্ন আইনে ৩০টি মামলা হয়েছে। মামলার বাদী অধিদপ্তর।
তবে মোতালেবরা মামলা থেকে রেহাই পাননি। তাঁরা মামলা থেকে রেহাই পেতে বিভিন্ন সংস্থার দ্বারে দ্বারে ঘুরছেন। দিনের পর দিন আদালতে হাজিরা দিচ্ছেন। দুই ভাইয়ের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ অনুসন্ধানে যুক্ত আছেন শুল্ক গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদপ্তরের উপপরিচালক মো. শাকিল খন্দকার। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, দিদারুলরা চার নিরীহ ব্যক্তিকে যে ফাঁসিয়েছেন, তা তাঁদের অনুসন্ধানে বেরিয়ে এসেছে।